প্রত্যয় নিউজ ডেস্কঃ নূহ (আ.) মহাপ্লাবনের সময় রজব মাসের দশম দিনে নৌকায় আরোহন করেন। অতঃপর ১৫০ দিন নৌকায় অতিবাহিত করেন। জুদি পর্বতে তাহাদিগকে লইয়া নৌকা স্থির ছিল এক মাস। আর তাহারা নৌকা হইতে অবতরণ করেন মুহাররম মাসের ১০ তারিখ। এই জন্য উক্ত দিবসকে আশুরার দিন বলা হয়। আশুরা মানে দশম। (সিরাত বিশ্বকোষ ১ম খণ্ড)
কুরআন কারিমে ইরশাদ হইয়াছে, আমি মুসার প্রতি ওহি নাজেল করিয়াছিলাম এই মর্মে- তুমি আমার বান্দাদিগকে লইয়া রজনীযোগে বহির্গত হও, তোমাদেরতো পশ্চাদ্ধাবন করা হইবে। সমুদ্রকে স্থির থাকিতে দাও, উহারা এমন এক বাহিনী যাহা নিমজ্জিত হইবে। মুসা (আ.) তাহার লোকজনসহ লোহিত সাগরের তীরে পৌঁছিলেন। ফেরআওন ১ লক্ষ উৎকৃষ্ট ঘোড়া ও ১৬ লক্ষ সেনা লইয়া তাদের দিকে অগ্রসর হইলেন। মহান আল্লাহর ইচ্ছায় মুসা (আ.) লহিত সাগরে তার হাতের লাঠি দ্বারা আঘাত করিলেন, ইহাতে ১২টি পথ হইলো। মুসা (আ.) তার দলবলসহ নিরাপদে সমুদ্র পার হবার পর আল্লাহর ইচ্ছায় পুনরায় তার লাঠি দ্বারা সমুদ্রের পানিতে আঘাত করিলেন। ইহাতে ফেরআওন ও তাহার দলবল পানিতে ডুবিয়া মরিল। ইহা ছিল মহররম মাসের ১০ তারিখ। তাই এই দিনকে আশুরার দিন বলা হয়। (সিরাত বিশ্বকোষ ২য় খণ্ড)
হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) মদিনায় আগমন করে দেখতে পেলেন যে, ইহুদিরা আশুরার দিনে রোজা পালন করে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন কী ব্যাপার? তারা বলল, এ অতি উত্তম দিন। এ দিনে আল্লাহ তাআলা বনি ইসরাইলকে তাদের শত্রুর কবল হইতে নাজাত দান করেন, ফলে এ দিন মুসা (আ.) রোজা পালন করেন। রাসুলুল্লাহ (স.) বললেন- আমি তোমাদের অপেক্ষা মুসার অধিক নিকটবর্তী। এরপর তিনি এ দিনে রোজা পালন করেন এবং রোজা পালনের জন্য নির্দেশ দেন। (সহিহ বোখারি শরীফ। হাদিস নং-১৮৭৮)
৬৮০ খৃষ্টাব্দে (১০ অক্টোবর) মহররম মাসের ১০ তারিখে কারবালার যুদ্ধ সংগঠিত হয়। মৃত্যুর আগে ইরাকের খলিফা মুয়াইবিয়া তার পুত্র ইয়াজিদকে উত্তরসুরী নিয়োগ করেন। কিন্তু হযরত আলীর (রা.) পুত্র খলিফা হোসাইন ও তাহার অনুসারিরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। এই সময় খলিফা হোসাইন ৭০ জন সহকারীসহ মক্কায় হিজরত করার সময় ইরাকের কারবালা নামক স্থানে ইয়াজিদের সেনা বাহিনী কর্তৃক নির্মমভাবে সপরিবাবে শাহাদৎ বরণ করেন। এই দিনকে আশুরার দিন বলা হয়। দিনটি শিয়া ও সুন্নি উভয় সম্প্রদায়ের কাছে ঐতিহাসিক বেদনার দিন হিসেবে পালিত হয়।
ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন